কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ধানসহ কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে সরকার কতিপয় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে এ বছর ১০ থেকে ১৫ লাখ টন চাল রফতানি করা হবে। এর আগে শুধু সুগন্ধি চাল রফতানির সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও এই প্রথমবারের মতো সব ধরনের চাল রফতানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এছাড়া কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বিগত অর্থবছরের রাজস্ব বাজেট বাবদ বরাদ্দকৃত ভর্তুকি খাতের তিন হাজার কোটি টাকা যান্ত্রিকীকরণ খাতে ব্যয় করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ মোতাবেক খসড়া প্রকল্প প্রণয়নও করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের নেয়া পদক্ষেপ জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় কৃষি সচিবসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকার ১০ থেকে ১৫ লাখ টন চাল রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা ঠিক রেখে চাল রফতানি করা হবে। যদিও এটি সহজ কাজ নয়। ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়েছে। চালের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ প্রণোদনা দেবে সরকার। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান কেনা হবে। চালের আমদানি শুল্ক ২৮ ভাগ থেকে বাড়িয়ে ৫৫ ভাগ আরোপ করা হয়েছে। তাই চাল আমদানি হবে না বলে আশা করি। চাল আমদানি নিরুৎসাহিত এবং চাল রফতানিকে উৎসাহিত করা হবে।
শ্রমিক সংকট নিরসনে যান্ত্রিকীকরণের বরাদ্দ বাড়ানো হবে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বিগত অর্থবছরের রাজস্ব বাজেট বাবদ বরাদ্দকৃত ভর্তুকি খাতের তিন হাজার কোটি টাকা যান্ত্রিকীকরণ খাতে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং সে মোতাবেক খসড়া প্রকল্পও প্রণয়ন করা হয়েছে। উৎপাদন বৃদ্ধি, শ্রমিকের অভাব এবং ২০১৭ সালে চাল আমদানির শুল্ক রেয়াতের কারণে চাহিদার অতিরিক্ত চাল আমদানি, তার বড় একটি অংশ মজুত এবং অনুকূল আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর ধানের দাম কমে গেছে। এজন্যই সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বলেন, ধানসহ কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে চাষিদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করে ফসলের ক্রয়মূল্য অগ্রিম নির্ধারণ করে মৌসুমের শুরুতেই সরাসরি কৃষক পর্যায় থেকে ধান সংগ্রহসহ এমন বেশকিছু দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বিশেষ করে সরকারি গুদামের ধারণ ক্ষমতা পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি, সরকারের ধান সংগ্রহের পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করে ৫০ লাখ টনে উন্নীত এবং চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করে রফতানিকে উৎসাহিত করা। এছাড়া কৃষক পর্যায়ে উৎপাদন ব্যয় কমানোর মাধ্যমে কৃষিকে লাভজনক করতে কৃষি মন্ত্রণালয় বেশ কিছু পদক্ষেপ নেবে। এরমধ্যে নন-ইউরিয়া সারসহ অন্যান্য উপকরণে প্রণোদনা বৃদ্ধি, সেচের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিসহ ব্যয় কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ এবং এক্ষেত্রে প্রয়োজনে প্রণোদনা আরও বৃদ্ধি করা হবে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply